নবুয়তের কততম বছরে চাচা আবু তালিব মারা যান? আবু তালেব জান্নাতি না জাহান্নামী?

How many years of Prophethood uncle Abu Talib died? Abu Taleb paradise or hell?

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নবুয়তের কততম বছরে চাচা আবু তালিব মারা যান? উত্তর: দশম বছরে। আবু তালেব জান্নাতি না জাহান্নামী? এর উত্তর হলো: জাহান্নামী । তার পূর্ণ নাম হচ্ছে আবু তালিব ইবনে আবদুল মুত্তালিব আর তিনি হলেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম এর আপন চাচা । তার ছেলে ছিলেন একজন খলিফা যার নাম হলো আলী । তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন বনি হাশিম গোত্রে যাদের বংশ ছিলো কুরাইশ । তিনি ছিলেন কুরআইশ গোত্রের একজন সম্মানিত নেতা ও প্রবীণ ব্যক্তি ছিলেন তিনি ।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নবুয়াতকালীন সময়ে তার চাচা আবু তালিব গোত্রীয়ভাবে তার সকল ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছিলেন ।
জন্ম৫৪৯ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেন।
মৃত্যু৬২০ খ্রিষ্টাব্দ মৃত্যুবরণ করেন
সমাধিজান্নাতুল মওলা নামক স্থানে, চাচা আবু তালিবের সমাধি হয়েছে
পরিচিতির কারণসম্পর্কে তিনি হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর চাচা ছিলেন।
দাম্পত্য সঙ্গীফাতিমা বিনতে আসাদ
সন্তানফাকিতাহ্‌,
তালিব,
আকিল,
জাফর,
আলী (ইসলামের চতুর্থ খলীফা হযরত আবু বকর রাঃ, তিনি হযতর ফাতেমা রাঃ এর স্বামী এবং হযরত হাসান ও কারবালার শহীদ হযরত হোসাইন রাঃ এর পিতা ছিলেন।),
যুমানাহ্‌ এবং
রাইতাহ্‌
পিতা-মাতাআব্দুল-মুত্তালিব ফাতিমা বিনতে আমর
আত্মীয়আজ-যুবায়ের ও আব্দুল্লাহ ছিলেন তার দুই ভাই
আবু তালিব , ابو طالب بن عبدالمطلب (আরবি) নবীজি (সাঃ) এর চাচা আবু তালেব এর সংক্ষিপ্ত বায়োগ্রাফি।

source: wikipedia


আবু তালেব জান্নাতি না জাহান্নামী ?

তালেব জান্নাতি না জাহান্নামী
আবু তালেব জান্নাতি না জাহান্নামী ?

উত্তর: জাহান্নামী । কারণ মৃত্যুর আগে হযরত মুহাম্মদ সাঃ তাকে যখন কালেমা পড়তে বললো তখন সে কালেমা না পড়ে , “ আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাতের উপরেই আছে “ বলে মন্তব্য করেছেন ।

আবূ তালিবকে জাহান্নামে আগুনের দু’টি জুতা পরিয়ে দেয়া হবে যা হবে জাহান্নামীদের মধ্যে সবচেয়ে হালকা শাস্তি । এই শাস্তির ফলে তার মগজ পর্যন্ত উথলাতে থাকবে ।

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪০৩

হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

আর এই সকল রেফারেন্স থেকে বোঝা যায় আবু তালেব জাহান্নামী ।

Source: bissoy

নবুয়তের কততম বছরে চাচা আবু তালিব মারা যান?

উত্তর: বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়তের দশম বছরে চাচা আবু তালিব মারা যান। তিনি নবীজি (সাঃ) কে অনেক ভালোবাসতেন এবং স্নেহের সাথে লালন পালন করেন।

আবু তালিবের শাস্তি কি ছিলো?

উত্তর: জাহান্নামের আগুন দ্বারা তৈরি দু’টি জুতা তাকে পরিয়ে দেওয়া হবে । এটিই ছিলো তার শাস্তি । উল্লেখ করা হয়ে থাকে যে, রোজ পরকালের হিসাব নিকাশ অনুযায়ী দোযখ বা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরের শাস্তি পাবেনঃ নবীজি (সা.) এর চাচা আবু তালিব (আবু-তালেব)। আর সেই শাস্তি হলো, আগুন দ্বারা বেষ্টিত একজুড়া গরম জুতা।

আবু তালেব নামের অর্থ কি

আবু-তালিব এটি একটি ইসলামিক নাম । আর এই নামটি সুন্দর ও অর্থবোধক একটা নাম। এর নামের অর্থ হলো: প্রার্থনাকারীর পিতা বা সাধকের পিতা । আর ইংরেজিতে Father of Seeker

আবু জাহেল কি নবীর চাচা?

জাহেল কি নবীর চাচা
আবু জাহেল কি নবীর চাচা

উত্তর: অনেকেই মনে করেন যে, আবু জাহেল নবীজি (সা.) এর চাচা। কিন্তু এটি ভুল তথ্য। আবু জাহেল নবীর চাচা ছিলেন নাহ । তার চাচা ছিলো আবু তালিব ইবনে আবদুল মুত্তালিব। নবীজি এবং আবু জাহেল একই বংশের ছিলেন (কুরাইশ বংশ)। কিন্তু তাদের উভয়ের গোত্র এক নয়, বরং আখেরি নবী (সা.) ছিলেন “বনু হাশিম” গোত্রের। আর আবু জাহেল ছিলো: বনু মাখজুম গোত্রের ব্যক্তি।

আবু জাহেল এর আসল নাম কি?

আবু জাহেল এটি তার আসল নাম না । তার পূর্ণ নাম হলো: আমর ইবনে হিশাম । মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রতি কঠোরভাবে শত্রুতা প্রদর্শন করেছিলেন আমর ইবনে হিশাম এবং সে মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কথা ও আল্লাহর বাণী প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। মূলত সেজন্যই আমর ইবনে হিশাম কে মুহাম্মাদ (সাঃ) “আবু জাহল” (أبو جهل; আক্ষরিক অর্থে “অজ্ঞতার জনক”) হিসাবে উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য যেঃ আমর ইবনে হিশামকে তার মা “ইবনে আল-হানাজালিয়া” বলেও ডাকতেন ।

মদিনার নবীজির জীবনী

মদিনার নবীজির জীবনী
মদিনার নবীজির জীবনী

হযরত মুহাম্মদ সাঃ-এর মাদানী জীবনকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যেতে পারে।

প্রথম পর্যায় :

  • এই পর্যায়ে প্রথম ছয় বছর নিয়ে আলোচনা করব হবে । ৬২২ খৃষ্টাব্দের ২৭শে সেপ্টেম্বর শুক্রবার হ’তে ৬ষ্ঠ হিজরীর যিলক্বা‘দ মাসে অনুষ্ঠিত হোদায়বিয়ার সন্ধি পর্যন্ত প্রথম ছয় বছর যা , ১লা হিজরী সনের ১২ই রবীউল আউয়াল মোতাবেক ।
  • এই সময় কাফের ও মুনাফিকদের মাধ্যমে ভিতরে ও বাইরের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ও সশস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করা হয় এবং সেই অনুযায়ী তা পরিচালিত হয় ।
  • এই ছয় বছরে সর্বমোট ৪৮টি বড় ও ছোটখাট অনেকগুলি যুদ্ধ সংঘটিত ও অভিযান পরিচালিত হয় ইসলামকে সমূলে উৎখাত করার জন্য ।

দ্বিতীয় পর্যায় :

  • দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়, ৬ হিজরী থেকে ৮ হিজরীর রামাযান মাসে মক্কা বিজয় পর্যন্ত প্রায় দু’বছর আর এটি হলো মক্কার মুশরিকদের সঙ্গে সন্ধি চলাকালীন সময়।
  • প্রায় দু’বছর বড়-ছোট ২১টি যুদ্ধ সংঘটিত হয় ইহুদী ও তাদের মিত্রদের সাথে আর এই সকল যুদ্ধ চলাকালীন অনেকেই আহত ও নিহত হয় ।

তৃতীয় পর্যায়:

  • এই তৃতীয় পর্যায় ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পর থেকে ১১ হিজরীতে রাসূলের মৃত্যু পর্যন্ত তিন বছর সময়কে বোঝানো হয়।
  • লোকেরা দলে দলে এই সময়ে ইসলামে প্রবেশ করতে থাকে আর চারদিক থেকে গোত্রনেতারা প্রতিনিধি দল নিয়ে মদীনায় এসে ইসলাম গ্রহণ করতে শুরু করে ।
  • রাসূলুল্লাহ (সা.) বিদেশী রাজন্য-বর্গের নিকটে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে দূত মারফত পত্র প্রেরণ করেন। এই সময়ে মানাত, উযযা, সুওয়া‘ প্রভৃতি প্রসিদ্ধ মূর্তিগুলি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই সময় হোনায়েন যুদ্ধ এবং রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াসের বিরুদ্ধে তাবূক যুদ্ধে গমন সহ বড়-ছোট ১৩টি অভিযান পরিচালিত হয়।
  • এভাবে মাদানী জীবনের ১০ বছরে ছোট-বড় ৮২টি যুদ্ধ ও অভিযান পরিচালিত হয়। কিন্তু সব বাধা অতিক্রম করে ইসলাম রাষ্ট্রীয় রূপ পরিগ্রহ করে এবং তৎকালীন বিশ্বের পরাশক্তি সমূহকে চ্যালেঞ্জ করে টিকে থাকার মত শক্তিশালী অবস্থানে উপনীত হয়।

আবু লাহাবের পরিচয়

আব্দুল মুত্ত্বালিবের অন্যতম পুত্র ছিলেন আবু লাহাব । তার নাম ছিল আব্দুল ‘উযযা এবং সে সুন্দর চেহারার অধিকারী হওয়ার কারণে তাকে ‘আবু লাহাব’ বলা হতো যার অর্থ ছিলো “অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ওয়ালা” । এই নামই আল্লাহ তার জন্য পসন্দ করেছেন।

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনী

হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর জীবনীর অনেক গুলো পার্যায় রয়েছে যেমন: শৈশব ও কৈশোর কাল , নবুয়ত-পূর্ব জীবন , নবুওয়ত প্রাপ্তি , মক্কি জীবন , মদিনায় হিজরত , মাদানি জীবন , মক্কা বিজয় , মক্কা বিজয়ের পর ইত্যাদি ।

নবীজির পরিবার পরিচয় ও জীবনী

হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সাম্পরিক পরিবার পরিচিতি ও জীবনী নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

পিতাআব্দ-আল্লাহ / আব্দুল্লাহ।
মাতাআমিনা
চাচাআবু তালিব , আল-জুবাইর, হারিস , হামজা
সন্তানমহানবী সা. এর সন্তানাদি কতজন? উত্তরঃ সর্বমোট সাতজন। তিন ছেলে এবং চার মেয়ে।

নবীজি (সা.) এর চার কন্যা সন্তানঃ
১) জয়নব (রা.),
২) রুকাইয়া (রা.),
৩) উম্মে কুলছুম (রা.) এবং
৪) ফাতিমা (রা.)

বি.দ্রঃ ফাতিমা হলো তার একমাত্র সন্তান যার সন্তানাদি শেষ পর্যন্ত জীবিত ছিল।

মহানবী (সা.) এর তিনজন পুত্র সন্তান ছিলেনঃ
০১. কাসিম
০২. তাহির
০৩. ইবরাহীম
স্ত্রী০১. খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ
০২. সাওদা বিনতে জামআ
০৩. আয়েশা বিনতে আবু বকর
০৪. হাফসা বিনতে উমর
০৫. জয়নব বিনতে খুযায়মা
০৬. উম্মে সালমা হিন্দ বিনতে আবি উমাইয়া
০৭. রায়হানা বিনতে জায়েদ
০৮. জয়নব বিনতে জাহশ
০৯. জুওয়াইরিয়া বিনতে আল হারিস
১০. রামহাল ( উম্মে হাবীবা বা রামালা নামেও পরিচিত) বিনতে আবু সুফিয়ান
১১. সাফিয়া বিনতে হুইয়াই
১২. মাইমুনা বিনতে আল হারিস
১৩. মারিয়া আল কিবতিয়া

নবীজির ১৩ জন স্ত্রীর নাম এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও অনেকে এখানে সংখ্যাটিকে 10-11 বা 13 হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তবে অনেকের মতে, তাদের মধ্যে দুজন দাসী ছিল।
নবীজির পরিবার পরিচয় ও জীবনী

আপনি কি জানেন নবুয়তের কততম বছরে বিবি খাদিজা ও চাচা আবু তালেব ইন্তেকাল করেন?

উত্তর: নবুয়তের দশম বছরে বিবি খাদিজা ও চাচা আবু তালেব ইন্তেকাল করেন ।

মহানবী (স) মেরাজ গমন করেন নবুয়তের কততম বছরে?

উত্তর: মহানবী (স) মেরাজ গমন করেন নবুয়তের একাদশ বছরে

উপরের সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে আমরা , নবুয়তের কততম বছরে কি হয়েছিলো বা নবুয়তের বছর গুলো নিয়ে কি কি প্রশ্ন ছিলো তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি । নবুয়ত শব্দের অর্থ হলো: সংবাদ দান । নবুয়ত এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তা’য়ালা তার বাণী নবীদের কাছে পৌঁছাতো জীবরাঈল ( আঃ ) এর মাধ্যমে ।

আর সেই বাণী নবী-রাসূলগণ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতেন । এই বাণী গুলো বিভিন্ন জায়গায় লিপিবদ্ধ করা হতো । আল-কোরআন আল্লাহ তাআলার সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ বাণী যা মুহাম্মদ ( সঃ ) এর উপর নাজিল হয়েছে । আর নবুয়ত শুধু মাত্র নবী-রাসূলগণ এর উপর নাজিল হয় এটি সাধারণ মানুষের উপর নাজিল হয় নাহ ।

এই মর্মে একটি কোরআনের আয়াত রয়েছে ,

আল্লাহ তার বাণী রাসুলদেরকে প্রেরণ করেছেন যা কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত,

পবিত্র আল-কুরআন

“তিনিই তাঁর বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ (সূরা) অবতীর্ণ করেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনতে পারেন। আর নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমাদের প্রতি অতিশয় দয়ালু, পরম করুণাময়।

[কুরআন ৫৭:৯]

নবুয়তের কততম বছরে চাচা আবু তালিব মারা যান? আবু তালেব জান্নাতি না জাহান্নামী? আশা করি, এই ‍দুইটি প্রশ্নের উত্তর আপনি সহজভাবে পেয়েছেন। তথাপি যদি কোন মতামত থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।।

Leave a Comment