HealthLifestyleTips and Tricks

কিভাবে মোটা হওয়া যায়? কি খেলে মোটা হওয়া যায়? মোটা হওয়ার ব্যায়াম

যারা রোগা-পাতলা ছিপছিপে দেখতে, তাদের সারাক্ষণ একটাই চিন্তা থাকে, “কিভাবে মোটা হওয়া যায়?” মোটা হওয়ার জন্য কি ব্যায়াম এর প্রয়োজন আছে? আপনার এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের এই পোস্টটি লেখা। আশা করি উত্তর পেয়ে যাবেন।

অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি, খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই সাধারণ একটি বিষয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা স্বাস্থ্যের দিক থেকে খুব একটা সুস্থ নন।কি খেলে মোটা হওয়া যায়?

এবং মোটা হওয়ার জন্য কী করতে পারে? সে সম্পর্কে তারা খুব আগ্রহী। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে তারা এই আন্ডার ওয়েট সমস্যায় ভোগেন।

    এই ধরনের রোগে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্ণভাবে কমে যায়। এছাড়া আপনার ওজন কম বা খুব পাতলা হলে আপনার আয়নার সামনে আপনাকে ভালো দেখাবে না, আপনি যখন আপনার পছন্দের জামাকাপড় পরবেন তখন মনে হবে কাপড়গুলো হ্যাঙ্গারে ঝুলছে। এছাড়াও, আপনাকে অনেক খারাপ কথা শুনতে হবে। সব মিলে , জীবনে হতাশা চলে আসে।

    কিভাবে মোটা হওয়া যায়?

    মোটা হওয়া যায় কি খেলে মোটা হওয়া যায় মোটা হওয়ার ব্যায়াম
    কিভাবে মোটা হওয়া যায়?

    ফিনফিনে পাতলা শরীর কেউ চায় না। এটা ভাল দেখায় না. খুব মোটা বা খুব শুকনা কোনটাই ভালো নয়; মাঝামাঝি থাকাই ভালো। স্বাস্থ্য স্বাভাবিকভাবেই আসে।যদি স্বাস্থ্য পরিবর্তন করা যেত তাহলে সবাই নিজের ইচ্ছে মত পরিবর্তন করে নিতো।

    তবে হ্যাঁ, অনুশীলনে, সমস্ত অসম্ভব কাজ করা যায়। নিয়মিত অনুশীলন, প্রচেষ্টা এবং ধৈর্যের সাথে, আপনার ইচ্ছা পূরণ হবে।

    মোটা হওয়ার জন্য ৫টি অভ্যাসের পরিবর্তন আনুন

    যারা খুব চিকন মানুষ, তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছিঃ আপনার প্রাত্যহিক কাজ কর্মে নির্বাচিত এই ৫টি অভ্যাসের পরিবর্তন করার মাধ্যমে কিভাবে মোটা হওয়া যায়, তা জানুন।

    1. আপনি যদি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান এবং ভালো ঘুমান তাহলে আপনি দ্রুত আপনার স্বাস্থ্য ফিরে পেতে পারেন। ঘুম না হলে আপনার শরীর ক্যালোরি ধরে রাখতে পারে না। রাতে, তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যান।
    2. খাবার প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খেয়ে নিন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এক ঘণ্টার মধ্যে নাস্তা শেষ করুন। সকালে বেশি করে খেতে পারেন। হ্যাম বার্গার, ফ্রাই, চিকেন ব্রেস্ট খেতে ক্ষতি নেই।
    3. চাপমুক্ত থাকুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম ক্ষুধা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
    4. প্রচুর ফল খান। ফল হল পুষ্টিকর খাবার যাতে প্রচুর ক্যালোরি থাকে। প্রতিদিন ফল ও ফলের রস খান। বিভিন্ন ফলের শরবত, কিউব, আঠা, জ্যাম, জেলি খান, এতে চর্বি থাকে যা আপনার স্বাস্থ্যকে মোটা করে তোলে।
    5. রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমাতে যান।

    কি খেলে মোটা হওয়া যায়?

    পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্যাভ্যাস : পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য প্রাকৃতিকভাবে ওজন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কারণ সবার শরীরেই দরকার পুষ্টিকর ও সুষম খাবার।

    চর্বিযুক্ত খাবার: ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার মানুষের শরীরকে মোটা করে। তাই মানুষ এই ধরনের খাবার বেশি খেলে ওজন বাড়ে বলে জানা যায়।

    দুধ ও ডিম: অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে বেশি পরিমাণে দুধ ও ডিমের মতো খাবার শরীরকে মোটা করে।

    মাখন এবং পনির: মাখন এবং পনির মানবদেহের মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। মিষ্টিও একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

    ড্রাই ফ্রুটস: ড্রাই ফ্রুটস (শুকনো ফল) ক্যালোরি এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় কিছু কাজু বা পেস্তা, কিসমিস বা খেজুর খান। আগের রাতে ১ কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ভালো হয়। পুষ্টি চার্টে শুধুমাত্র বাদামের পরিমাণ বেশি রেখে দেখুন, কাজ হয়ে যাবে।

    Read Also:
    পেগনেন্ট টেস্ট কিভাবে করে? প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি
    ওষুধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় – লক্ষণ ও প্রতিকার

    ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়

    শরিয়তে মোটা হওয়ার উপায় ‘খেজুরের সাথে শসা খাওয়া। এই সম্পর্কে দুইটি হাদিস দেখুন—

    এক. আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, ‘আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল আমাকে স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে পাঠাবেন। এজন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, কিন্তু কোনো ফল হয়নি। শেষে তিনি আমাকে পাকা খেজুরের সাথে শসা বা খিরা খাওয়াতে থাকলে— আমি তাতে উত্তমভাবে স্বাস্থ্যের অধিকারী হই। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩৯০৩)

    দুই. আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমার মা আমাকে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সংসারে পাঠাতে চাচ্ছিলেন, তাই আমার দৈহিক পরিপুষ্টির জন্য চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু তা কোনো উপকারে এলো না। অবশেষে আমি তাজা খেজুরের সাথে শসা মিশিয়ে খেলাম এবং উত্তমরুপে দৈহিক পরিপুষ্টি লাভ করলাম।’ (আবু দাউদ,হাদিস : ৩৩২৪)

    কারও প্রশ্ন হতে পারে— চিকিৎসকরা তো স্বাস্থ্য কমাতে শসা খাওয়ার নির্দেশ দেয়? এর উত্তর হলো- হাদিসে খেজুর আর শসা একসঙ্গে খাওয়ার কথা এসেছে। এটা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সুন্নতও বটে। আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রা.) বর্ণনা করেন যে, নবী (সা.) খেজুরের সঙ্গে একত্রে শসা খেতেন। (সহিহ ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৩২৫)

    মোটা হওয়ার ব্যায়াম

    স্ট্রেংথ ট্রেনিং ওজন বাড়ানোর জন্য একটি চমৎকার ব্যায়ামের। এই ধরনের ব্যায়াম শরীরের মাংসপেশী বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এর জন্য আপনাকে জিমে যাওয়ার দরকার নেই। এই ধরনের ব্যায়াম কোন যন্ত্র বা ব্যায়াম সরঞ্জাম ছাড়া বাড়িতে শুরু করা যেতে পারে. শুধু ইউটিউব বা গুগলে নিম্নলিখিত শব্দগুলি অনুসন্ধান করুন এবং আপনি অনুশীলনের নির্দেশাবলীর অনেক ভিডিও পাবেন। এরকম কিছু শব্দ-

    • পুশ আপ(pushup),
    • ডাম্বল শোল্ডার(Dumbbell shoulder),
    • যোগাসন(yoga),
    • জগিং(jogging),
    • স্কোয়াট(squat),
    • বেঞ্চ প্রেস ইত্যাদি।

    স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে ডায়েটের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। সুস্থ থাকতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হয়। রোজ না হলেও সপ্তাহে অন্তত তিনদিন করুন। সুগঠিত পেশীর জন্য এটা দরকার। আপনি যদি আগে কখনও ব্যায়াম না করেন তবে ধীরে ধীরে শুরু করুন। কিন্তু শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

    কিভাবে মোটা হওয়া যায়? সারসংক্ষেপে উত্তর হলোঃ নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান, নিয়মিত ঘুম ও বিশ্রাম নিশ্চিত করুন এবং দেরি করে জেগে থাকা, তাস খেলা, অতিরিক্ত চিন্তা করা, হস্তমৈথুন ইত্যাদি সব ধরনের খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করুন। তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।

    Related Articles

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    Back to top button